রমজানের প্রথম দিনেই ঝালকাঠিতে একটি লবন কারখানার উৎপাদন ও কাচামাল ওঠানামার কাজ বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালী এক পৌর কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। সোমবার সকালে পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হুমায়ুন কবিরের নির্দেশে তাঁর লোকজন গিয়ে শহরের পশ্চিম ঝালকাঠি এলাকার শরীর সল্ট কারখানায় কাচামাল ওঠানামা বন্ধ করে দেয়। এতে দুর্ভোগে পড়েন কারখানার মালিক ও শ্রমিকরা। সকাল থেকে লবনের এ কারখানাটিতে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।
কারখানার মালিক ও শ্রমিকরা অভিযোগ করেন, ঝালকাঠির ‘শরীফ সল্ট’ দক্ষিণাঞ্চলের বিখ্যাত লবন। দীর্ঘদিন ধরে ইঞ্জিন চালিত বড় বড় ট্রলারে কক্সবাজার থেকে কাচামাল এনে কারাখনাটিতে উৎপাদন করা হয় বিশুদ্ধ লবন। কারখানাটি শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে হওয়ায় স্থানীয় কাউন্সিলর ও ঝালকাঠি হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি হুমায়ুন কবির অনৈতিক দাবি করে আসছিল কারখানার মালিক যুবলীগ নেতা কামাল শরীফের কাছে। এসব অনৈতিক দাবি না মানায় আজ সোমবার সকালে কাউন্সিলর ও শ্রমিকনেতা হুমায়ুন কবিরের নির্দেশে তাঁর সবুজ খান লোকজন নিয়ে কারখানায় কাচামাল উঠানামা বন্ধ করে দেয়। এতে বন্ধ হয়ে যায় লবন কারখানাটির উৎপাদন কাজ। কারখানায় কাজ না করায় রমজানের প্রথাম দিনেই বেকার হয়ে পড়েছেন শ্রমিকরা। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানিয়েছেন শরীফ সল্টের মালিক কামাল শরীফ।
কারখানার শ্রমিক কদম আলী বলেন, মে দিবসের অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি পৌর কাউন্সিলর হুমায়ুন কবির শরীফ সল্ট বন্ধ করার ঘোষণা দেন। এ কারখানায় কোন শ্রমিক যেন কাজ না করে, সেই নির্দেশও দেন তিনি। শ্রমিকরা কাজ করলে তাদের সদস্য পদ বাতিলের হুমকিও দেয় হুমায়ুন কবির। এর পরও আমরা কারখানা চালু রেখেছিলাম। কিন্তু হুমায়ুনের নির্দেশে সোমবার তাঁর ভাই সবুজ লোকজন নিয়ে এসে কারখানায় কাচামাল ওঠানামা বন্ধ করে দেয়। শ্রমিকদের কারখানা থেকে বের হয়ে যেতে বলে। এতে কারখানার কাজ বন্ধ রয়েছে। কারখানা বন্ধ থাকলে শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়বে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক অভিযোগ করেন, শ্রমিকদের নিয়ন্ত্রণ করেন কাউন্সিলর হুমায়ুন কবির। তিনি না চাইলে কোন শ্রমিক কারখানায় কাজ করতে পারে না। কেউ তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে গেলে তাদের ব্লাক লিষ্ট করে, কোন কারখানায় কাজ করতে দেয় না। রমজানে শ্রমিকরা কাজ করতে না পারলে রোজগারও বন্ধ থাকবে। সামনে ঈদে স্ত্রী সন্তানদের পোশাক কেনার টাকাও পাবো না। হুমায়ুন কবিরের সেচ্ছাচারিতা ও অনৈতিক কাজগুলো বন্ধ করার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবিও জানান তিনি।
শরীফ সল্টের মালিক কামাল শরীফ বলেন, তিনি আমার কাছে অনৈক দাবি করেছিলেন। আমি তা পূরণ করিনি বিধায় কারখানার শ্রমিকদের কাজে বাধা দিচ্ছেন। এমনকি আমার কারখানায় কাচামাল ওঠানামাও বন্ধ করে দেন তিনি। আমি ইতোপূর্বে তাঁর বিরুদ্ধে থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলাম। এতে তিনি আরো ক্ষিপ্ত হয়েছেন।
এব্যাপারে কাউন্সিলর ও শ্রমিক নেতা হুমায়ুন কবির বলেন, নিজেরাই কারখানা বন্ধ করে অহেতুক আমাকে দোষারোপ করছে। আমরা কোন কারখানা বন্ধ করিনি।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply